শনিবার (০৩ জুলাই) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী। পরে বিলটি অধিকতর যাচাই বাছাই করার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। কমিটিতে যাচাই বাছাই করে আগামী ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়।
উত্থাপিত বিলে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টি বোর্ড আইনে যা থাকছে: গান্ধী ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান কার্যালয় নোয়াখালীর জয়াগে থাকবে। তবে বোর্ড প্রয়োজনবোধে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বাংলাদেশের যেকোন স্থানে তার আঞ্চলিক কার্যালয় বা শাখা স্থাপন করতে পারবে।
ট্রাস্টি বোর্ড: একজন চেয়ারম্যান ও ৬ জন ট্রাস্টির সমন্বয় ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হবে। চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টিগণ সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টিগণ তাদের মনোনয়নের তারিখ হতে তিন বৎসর পর্যন্ত স্বপদে বহাল থাকবেন। তবে শর্ত থাকে যে সরকার চেয়ারম্যান বা ট্রাস্টিগণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে তাদের মনোনয়ন বাতিল করতে পারবে।
বোর্ডের কার্যাবলী: গান্ধী আশ্রম পরিচালনা ও তার উন্নয়ন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিধবা, এতিম ও দুস্থদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ, সুতা-কাটা, বলুন, মৌমাছি পালন, মৎস্য চাষ বা সমজাতীয় অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের লাভজনক পেশা গ্রহণ করতে সহায়তা করা। কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা, অম্বর চরকা সরবরাহ এবং জনসাধারণকে শান্তি ও সম্প্রীতিতে জীবনযাপনসহ স্বাবলম্বীকরণ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন করা।
ট্রাস্টি বোর্ডে একজন সচিব থাকবেন। সচিব বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং তার চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলি বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত হবে। সচিব বোর্ডের প্রধান নিবার্হী হবেন এবং তিনি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
সচিবের পদ শূন্য হলে কিংবা অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে সচিব তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত সচিব যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা সচিব দায়িত্ব পালনের সামর্থ্য না হওয়া পর্যন্ত বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত কোন ব্যক্তি সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
তহবিল গঠন: বোর্ডের একটি তহবিল থাকবে। যে সকল উৎস থেকে অর্থ জমা করা যাবে তার বিবরণে বলা হয়েছে- সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান, কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত দান বা অনুদান, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হতে প্রাপ্ত আয়, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিদেশি সরকার বা সংস্থা হতে প্রাপ্ত অনুদান বা ঋণ, অন্য কোনো বৈধ উৎস হতে প্রাপ্ত, অর্থ গান্ধী আশ্রমের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত অর্থ এবং গান্ধী আশ্রমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় হতে প্রাপ্ত আয়।
বিলের উদ্দেশ্য কারণ সমৃদ্ধ বিবৃতিতে বলা হয়েছে- নোয়াখালী জেলার জয়াগ নামকস্থানে শান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি গান্ধী দর্শনের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রমের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করার জন্য গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টি বোর্ড অর্ডিন্যান্স ১৯৭৫ এর মাধ্যমে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। সামরিক অধ্যাদেশ বাতিল করে আইনটি কার্যকর করার জন্য বিলটি আনা হয়েছে।
মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত এই ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন গান্ধী আশ্রম পরিচালনা করার স্বার্থে প্রস্তাবিত আইনে নতুন কোনো বিধান না যুক্ত করে কেবল পূর্ববর্তী অধ্যাদেশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বোর্ডের গঠন ও কার্যক্রমকে চলমান রাখার হয়েছে।
Leave a Reply